অণুচক্রিকা কাকে বলে? অণুচক্রিকার কাজ কী
এখানে নিচে অণুচক্রিকা কি, অণুচক্রিকা কাকে বলে এবং অণুচক্রিকা এর কাজ কী সহ অণুচক্রিকার বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
রক্তের উপাদান হিসেবে ভাসমান বিভিন্ন কোষকে রক্তকণিকা বলে। এগুলো হিমাটোপয়েসিস প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। অন্যান্য কোষের মতো স্ববিভাজিত হয়ে সৃষ্টি হয় না বলে এদের কোষ না বলে কণিকা বলা হয়। রক্তের ৪৫% হলো রক্তকণিকা যা রক্তরসের মধ্যে নিমজ্জিত থাকে। রক্তকণিকা তিন ধরণের, যথা- এরিথ্রোসাইট বা লোহিত রক্তকণিকা, লিউকোসাইট বা শ্বেতরক্তকণিকা ও প্লেইটলেট বা থ্রম্বোসাইট বা অণুচক্রিকা।
অণুচক্রিকা কাকে বলে
দেহের লাল অস্থিমজ্জার মেগাক্যারিওসাইট নামে বড় কোষ থেকে উৎপন্ন ও রক্তরসে ভাসমান ১-৪ µm ব্যাসসম্পন্ন, অনিয়তাকার, ঝিল্লি-আবৃত, সামান্য সাইটোপ্লাজমযুক্ত কিন্তু নিউক্লিয়াসবিহীন, কোষ-ভগ্নাংশকে অণুচক্রিকা বা প্লেইটলেট বলে। প্রতি ঘনমিলিমিটার রক্তে প্রায় ১,৫০,০০০-৩,০০,০০০০ অণুচক্রিকা থাকতে পারে। রক্তস্রোতে প্রবেশের পর অণুচক্রিকার জীবনকাল ৫-৯ দিন।
অণুচক্রিকার কাজ
অণুচক্রিকার কাজগুলো হলো-
১। অস্থায়ী প্লেইটলেট প্লাগ সৃষ্টির মাধ্যমে রক্তপাত বন্ধ করে।
২। রক্তজমাট ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন ক্লটিং ফ্যাক্টর ক্ষরণ করে।
৩। প্রয়োজন শেষে রক্তজমাট বিগলনে সাহায্য করে।
৪। ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে।
৫। দেহের কোথাও ব্যথার সৃষ্টি হলে নিউট্রোফিল ও মনোসাইটকে আকৃষ্ট করতে রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে।
৬। সেরোটোনিন নামক রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে রক্তপাত বন্ধের উদ্দেশ্যে রক্তবাহিকাকে দ্রুত সংকোচনে উদ্বুগ্ধ করে।
৭। রক্তবাহিকার এন্ডোথেলিয়ামের অন্তঃপ্রাচীর সুরক্ষার জন্য গ্রোথ-ফ্যাক্টর ক্ষরণ করে।
৮। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি অণুচক্রিকা থাকলে রক্তনালির ভিতরে অদরকারী রক্তজমাট সৃষ্টি, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।