অসমোরেগুলেশন কী? অসমোরেগুলেশনে বৃক্কের ভূমিকা
এখানে নিচে অসমোরেগুলেশন কি, অসমোরেগুলেশন কাকে বলে, অসমোরেগুলেশন বলতে কী বোঝায় এবং অসমোরেগুলেশনে বৃক্কের ভূমিকা আলোচনা করা হলো।
অসমোরেগুলেশন প্রক্রিয়া বলতে জীবন্ত কোষ বা দেহের অন্তঃ ও বহিঃপরিবেশের মধ্যে অভিস্রবণিক চাপের সমতা রক্ষাকে বুঝায়। বৃক্ক দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের স্থিতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেহের পানি ও সোডিয়াম, পটাসিয়াম লবণ এবং ক্লোরাইড আয়নের মধ্যে একটি আন্তরসাম্য রক্ষা প্রক্রিয়াকে অসমোরেগুলেশন বলা হয়।
অসমোরেগুলেশন কাকে বলে
মানবদেহের অভ্যন্তরে কোষকলায় বিদ্যমান পানি ও বিভিন্ন লবণের ভারসাম্য রক্ষা কৌশলকে অসমোরেগুলেশন বলে। এই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
অসমোরেগুলেশনে বৃক্কের ভূমিকা
দেহে অন্তঃঅভিস্রবণিক চাপের সমতা বিধান দেহের জন্য অপরিহার্য। এতে করে দেহ তরল (body fluid) খুব ঘনও হয়না আবার খুব হালকাও হয়না। দেহের মধ্যস্থ তরল পদার্থ ও দ্রবীভূত লবণসমূহের ঘনত্বের উপর অভিস্রবণ প্রক্রিয়া নির্ভর করে। কোষের অভ্যন্তরের তরল পদার্থ এবং কোষের বাইরে, যেমন-রক্তের প্লাজমা অংশ, টিস্যুরস ও লিম্ফ ইত্যাদি তরল পদার্থের গঠন একটি সুনির্দিষ্ট মাত্রায় বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন।
দেহে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পানি ও লবণের পরিমাণের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। যেমন, শ্বসনের মাধ্যমে কিছু পানি হারিয়ে যায়। ঘাম নিঃসরণের মধ্য দিয়ে শরীর থেকে কিছু পরিমাণ পানি নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেহ তরলের অভিস্রবণিক চাপের তেমন তারতম্য ঘটে না। কারণ বৃক্ক এই অভিস্রবণিক চাপকে তেমন বাড়তে বা কমতে দেয় না। মূত্রের সঠিক পরিমাণকে বজায় রেখে বৃক্ক দেহ তরলের পরিমাণ ও অভিস্রবণিক চাপকে সক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন- খুব বেশি পরিমাণ পানি এক সঙ্গে পান করা হলে ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণ মূত্র ত্যাগ হয়। এরপর মূত্রের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে আসবে । বৃক্ক জানে কি পরিমাণ অতিরিক্ত পানি গ্রহণ করা হয়েছিল, আর প্রায় সেই পরিমাণ পানি শরীর থেকে নিষ্কাশিত করতে হবে।