Bangla

উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশের পর ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা

এখানে নিচে বাংলা ২য় পত্রের লিখিত অংশের এইচএসসি পরীক্ষার পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ দেওয়া হলো।

বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় প্রায়ই এ বিষয়ে সংলাপ রচনা আসে। তাই উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশের পর ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে দুই পরীক্ষার্থী বন্ধুর মধ্যে সংলাপ বা কথোপকথন নিচে দেওয়া হলো।

এইচএসসি পরীক্ষার পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ

সাদিক: মালিহা, তুমি তো দেখছি সারাক্ষণই পড়ছ, এত পড়ে লাভ কী বলো তো?

মালিহা: বলছ কি সাদিক। সামনে পরীক্ষা, না পড়লে চলবে কেন? আমি তো বলি, তোমার আরো পড়াশোনা করা উচিত।

সাদিক: আমি যে তা ভাবি না, তা নয়, তবে কি জান বিশেষ উৎসাহ পাই না। বাবা মায়ের ইচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি। আমার কিন্তু একটুও ইচ্ছে হয় না ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার।

মালিহা: আসলে কী জান, আমাদের নিজেদের ইচ্ছেমতো আমরা ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি না। আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে অভিভাবকদের ইচ্ছেয়। একটু মেধাবী হলে তো কথাই নেই, হয় ডাক্তারি পড়, নয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং পড়। যেন এছাড়া আর কিছু পড়ার নেই, করার নেই। আসলে আমাদের অভিভাবক খোঁজেন নিশ্চিত টাকা রোজগারের একটা পেশা।

সাদিক: তুমি ঠিক বলেছ মালিহা। সেই সঙ্গে বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের জীবনে কী নিদারুণ আশাভঙ্গের ইতিহাস জড়িয়ে থাকে ভেবে দেখেছ। উচ্চ-মাধ্যমিক পাশের পর কতজন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তির সুযোগ পায় বলো তো। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবার আশা নিয়ে যারা ভর্তির সুযোগ পেল না তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি?

মালিহা: লেখাপড়ার সঙ্গে জীবিকার প্রশ্ন চিরকালই জড়িয়ে থাকবে; কিন্তু সেই সঙ্গে কার কোনদিকে প্রবণতা সেটাও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।

সাদিক: নিশ্চয়। ধর, কসাইয়ের মতো স্বভাবের একটা লোক ডাক্তার হয়ে গেল; কিংবা একজন কবি হলো ইঞ্জিনিয়ার। আচ্ছা মালিহা, তুমি ভবিষ্যৎ জীবনের কথা কিছু ভেবেছ?

মালিহা: এসএসসি পাশের পরেই আমি আমার জীবনের একটা লক্ষ্য স্থির করেছি। তুমি তো জান আমার মাধ্যমিকের ফল ভালোই হয়েছে। ইচ্ছে করলে বিজ্ঞান পড়তে পারতাম। কিন্তু আমি মানবিক বিভাগই বেছে নিয়েছি। আমার ইচ্ছে ভবিষ্যতে আমি একজন ভালো সাংবাদিক হব। সেটা আমার পেশাও হবে, আর হবে আমার সামাজিক দায়িত্ব পালনের নেশা।

সাদিক: বাড়ি থেকে কোনো বাধা পাওনি।

মালিহা: আমার বাড়ির সবাই আমার ইচ্ছাকে মেনে নিয়েছেন। মা যেহেতু শিক্ষিকা, তাঁর ইচ্ছে ছিল শিক্ষাজীবী হই। মাকে বোঝালাম সাংবাদিকতাও তো কলম-পেশাই। মা সহাস্যে মেনে নিলেন। আচ্ছা সাদিক, তুমি ভবিষ্যৎ জীবন কেমন করে গড়ে তুলতে চাও?

সাদিক: আমি একজন অর্থনীতিবিদ হতে চাই। সত্যি মালিহা, মাঝে মাঝে মনে হয়, এদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যে কোনো গোলমাল আছে। নইলে এত দারিদ্র্য, এত অপচয়, এত বৈষম্য কেন? এসব সমস্যার কি কোনো সমাধান নেই? অন্তর থেকে আমি একজন অর্থনীতির ছাত্র হতে চাই।

মালিহা: তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা খুব ভালো সাদিক। আর একজন ভালো অর্থনীতিবিদ হতে হলে যে বেশি করে পড়াশোনা করা দরকার সেটা নিশ্চয় জানো। নতুন উদ্যমে এবার পড়া শুরু করে দাও।

সাদিক: তোমার সঙ্গে কথা বলে আমার উৎসাহ আরো বেড়ে গেল, মালিহা। আমিও তোমার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।

Digital Porasona Telegram Channel

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button