আংশিক পাতন কাকে বলে? আংশিক পাতন পদ্ধতি
এখানে নিচে আংশিক পাতন কাকে বলে, আংশিক পাতন পদ্ধতি বা আংশিক পাতন প্রক্রিয়া এবং আংশিক পাতন এর উদাহরণ সহ আংশিক পাতনের প্রয়োগ দেওয়া হলো।
কোন মিশ্র তরল পদার্থের উপাদান সমূহের স্ফুটনাংকের ব্যবধান 40 ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি হলে সাধারণ পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা সম্ভব কিন্তু তরল মিশ্রণের উপাদানসমূহের স্ফুটনাংকের ব্যবধান 40 ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কম হলে তখন ফ্লাস্ক ও শীতকের মাঝখানের ‘অংশ কলাম’ নামক ‘সাহায্যকারী শীতক’ ব্যবহার করে পাতন প্রক্রিয়ায় তরল উপাদানসমূহের পৃথকীকরণ সম্ভব হয়।
আংশিক পাতন কাকে বলে?
‘অংশ কলাম’ ব্যবহার করে পাতন প্রক্রিয়ায় মিশ্রণের তরল উপাদানকে পৃথক করার পদ্ধতিই হলো আংশিক পাতন। যেমনঃ আংশিক পাতনের মাধ্যমে বাষ্পীভূত কেরোসিনকে পাইপের মাধ্যমে আলাদা করে শীতল করলে বিশুদ্ধ কেরোসিন পাওয়া যায়।
আংশিক পাতন পদ্ধতি
মনে করি একটি তরল মিশ্রণে A ও B দুটি জৈব যৌগ আছে। A এর স্ফুটনাংক হলো 85 ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং B এর স্ফুটনাঙ্ক হলো 100 ডিগ্রী সেলসিয়াস। মিশ্রনটিকে পাতন ফ্লাস্কে নিয়ে ছোট ছোট বালব বিশিষ্ট একটি অংশ কলামে যথারীতি যুক্ত করে উত্তপ্ত করা হয়। মিশ্রণটি ফুটতে থাকে ও উৎপন্ন বাষ্প অংশ কলামের ভেতর দিয়ে উপরে উঠলে উক্ত বাষ্পের অপেক্ষাকৃত কম উদ্বায়ী B এর বাষ্প বায়ুর শৈত্য অংশে ঘনীভূত হয়ে নিচে নেমে আসে এবং অধিক যৌগ A এর বাষ্প ক্রমশ উপরের দিকে উঠতে থাকে।
এতে কম উদ্বায়ী ঘনীভূত তরলের একটি নিম্নমুখী প্রবাহ ও অধিক উদ্বায়ী তরলটির বাসবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহকে চলতে থাকে। ফলে কম উদ্বায়ী তরলের বাষ্প ঘনীভূত হয়ে পুনরায় ফ্লাস্কে আসে এবং অধিক উদ্বায়ী তরলের বাষ্প অংশ কলাম পার হয়ে লিবিগ শীতকে প্রবেশ করে ও ঘনীভূত হয়ে পাতিত তরলরূপে গ্রাহক পাত্রে জমা হয়। পরে দুই তরলকে পৃথক ভাবে পুনঃপাতন করে বিশুদ্ধ করা হয়।
আংশিক পাতনের প্রয়োগ
আধুনিক রাসায়নিক শিল্পে অংশ কলাম ব্যবহার করে পেট্রোলিয়াম থেকে ডিজেল, পেট্রোল, কেরোসিন, পৃথকীকরণ, রেকটিফাইড স্পিরিট উৎপাদন, আলকাতরার অংশ পাতন, লঘু তৈল থেকে বেনজিন, টলুইন প্রভৃতি পৃথকীকরণে আংশিক পাতনের প্রয়োগ করা হয়।