Bangla

পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রথম পত্রের কবি ফররুখ আহমদের রচিত পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব নিচে দেওয়া হলো।

ফররুখ আহমদের ‘পদ্মা’ কবিতাটি তাঁর ‘কাফেলা” নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। ‘কাফেলা’ কাব্যগ্রন্থটি ১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয়। এ কাব্যটি সাতটি সনেটের সমন্বয়ে রচিত। ‘পদ্মা’ কবিতাটি এ কাব্যগ্রন্থের পাঁচ সংখ্যক সনেট কবিতা। পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো।

পদ্মা কবিতার মূলভাব

ফররুখ আহমদের “পদ্মা” কবিতাটি ‘কাফেলা’ (১৯৮০) নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। ‘কাফেলা’ কাব্য সাতটি সনেটের সমন্বয়ে রচিত। সংকলনভুক্ত কবিতাটি পাঁচ সংখ্যক সনেট।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য নদ-নদী। এসবের মধ্যে পদ্মা সর্ববৃহৎ। ‘পদ্মা’ কবিতায় এ নদীর দুই রূপ প্রকাশিত হয়েছে। একদিকে এর ভয়ংকর, প্রমত্ত রূপ- যা দেখে বহু সমুদ্র ঘোরার অভিজ্ঞতায়— ঋদ্ধ, দুরন্ত জলদস্যুদের মনেও ভয়ের সঞ্চার হয়। অন্যদিকে, পদ্মার পলিতে প্লাবিত এর দুই পাড়ের উর্বর ভূমি মানুষকে দিয়েছে পর্যাপ্ত ফসল, জীবনদায়িনী সবুজের সমারোহ। আবার, এই পদ্মাই বর্ষাকালে জলস্রোতে স্ফীত হয়ে ভাসিয়ে নেয় মানুষের সাজানো বাগান, ঘর, এমনকি জীবন পর্যন্ত। সেই ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আবারও প্রাণের স্পন্দন জেগে ওঠে পদ্মাকে ঘিরেই। অর্থাৎ একই পদ্মা কখনও ধ্বংসাত্মক রূপে, কখনও কল্যাণময়ী হয়ে এদেশের জনজীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে।

“পদ্মা” চতুর্দশপদী (sonnet) কবিতা । তিন পঙ্ক্তিযুক্ত চারটি স্তবক এবং শেষে দুই পক্তিযুক্ত একটি স্তবকে কবিতাটি বিন্যস্ত। প্রতি পঙ্ক্তিতে রয়েছে ১৮ মাত্রা। কবিতাটির মিলবিন্যাস- কখক খগখ গখগ ঘঙঘ ঙঙ।

পদ্মা কবিতার মূল বিষয়

নদীমাতৃক বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য নদনদী। এসবের মধ্যে পদ্মা সর্ববৃহৎ। ‘পদ্মা’ কবিতায় এ নদীর দুই রূপ প্রকাশিত হয়েছে। একদিকে এর ভয়ংকর, প্রমত্ত রূপ— যা দেখে বহু সমুদ্র ঘোরার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ, দুরন্ত জলদস্যুদের মনেও ভয়ের সঞ্চার হয়। অন্যদিকে, পদ্মার পলিতে প্লাবিত এর দুই পাড়ের উর্বর ভূমি মানুষকে দিয়েছে পর্যাপ্ত ফসল, জীবনদায়িনী সবুজের সমারোহ। আবার, এই পদ্মাই বর্ষাকালে জলস্রোতে স্ফীত হয়ে ভাসিয়ে নেয় মানুষের সাজানো বাগান, ঘর, এমনকি জীবন পর্যন্ত। সেই ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আবারও প্রাণের স্পন্দন জেগে ওঠে পদ্মাকে ঘিরেই। অর্থাৎ একই পদ্মা কখনো ধ্বংসাত্মক রূপে, কখনো কল্যাণময়ী হয়ে এদেশের জনজীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে।

কবিতার নামকরণ

‘পদ্মা’ কবিতার নামকরণ করা হয়েছে এর বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে। আলোচ্য কবিতায় ‘বাংলার মানুষের জীবনপ্রবাহে প্রমত্ত পদ্মার ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা যায়। পদ্মা কখনো ধ্বংসাত্মক রূপে, কখনো কল্যাণময়ী হয়ে এদেশের জনজীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে । ফলে কবিতাটির নামকরণ ‘পদ্মা’ যথার্থ হয়েছে।

রূপশ্রেণি: চতুর্দশপদী (Sonnet) কবিতা। কবিতাটি চৌদ্দ চরণ ও আঠারো মাত্রার ।

মিলবিন্যাস: কখক খগখ গঘগ ঘঙঘ ঙঙ।

পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা

পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলো নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল। আমাদের। বাংলাদেশের জনপদগুলোর ক্ষেত্রেও তাই। এদেশের কৃষি, শিল্প ও সংস্কৃতিতে নদনদীর ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নদনদীর কল্যাণেই এদেশের মাটি এত উর্বর হয়েছে। এদেশের যাতায়াতব্যবস্থাও একসময় নদীকেন্দ্রিক ছিল। সহজ ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে নদীপথের বিকল্প নেই। এখনো দেশের পণ্য পরিবহণের একটি বড়ো অংশ নদীপথেই হয়।

বস্তুত, আমাদের দেশের অধিকাংশ অঞ্চলই সমতল ভূমি। অপেক্ষাকৃত এই নিচু সমতল ভূমির ওপর দিয়ে জালের মতো অসংখ্য নদনদী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এই নদীগুলো প্রবাহিত হওয়ার সময় স্রোতধারার সাথে বয়ে আনে বিপুল পরিমাণ পলিমাটি। এই পলিই এদেশের মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করেছে। ফলে-ফুলে-ফসলে পূর্ণ হয়েছে আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি। শুধু তাই নয়, এদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের পেছনে ষড়ঋতুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এর মূলে রয়েছে এদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রভাব।

দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নদনদীগুলো অনুকুল আবহাওয়া বজায় রাখতেও ভূমিকা রাখে। এছাড়াও দেশের মানুষের প্রাত্যহিক জীবনাচার এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও নদনদীর বিশেষ উপস্থিতি রয়েছে। আর তাই প্রাচীনকাল থেকেই এদেশের সাহিত্য ও শিল্পে নদনদীর কথা পাওয়া যায়। ভাটিয়ালি ও সারি গান এ বিষয়েরই প্রমাণ বহন করে।

আলোচ্য কবিতায় কবি ফররুখ আহমদ একই সঙ্গে পদ্মা নদীর কল্যাণময়ী এবং বিধ্বংসী রূপটিকে উন্মোচন করেছেন। তবে ধ্বংসের পর তীরবর্তী অঞ্চলে নতুন করে প্রাণের স্পন্দন জাগে পদ্মাকে অবলম্বন করেই। এক্ষেত্রে এদেশের ওপর নদনদীর গভীর প্রভাবের দিকটি প্রত্যক্ষ করেই তিনি পদ্মার গুণগান করেছেন। পদ্মা বাংলাদেশের প্রধান নদী। এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জীবনাচরণের সঙ্গে পদ্মার নাম নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে।

Digital Porasona Telegram Channel

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button