তরুণাস্থি কাকে বলে? তরুণাস্থির গঠন ও কাজ
এখানে নিচে তরুণাস্থি কাকে বলে, তরুণাস্থির গঠন, তরুণাস্থির কাজ সহ তরুণাস্থি সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।
বিশেষ ধরনের যোজক কলা বা টিস্যুনির্মিত অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে গঠিত যে তন্ত্র দেহের কাঠামো নির্মাণ করে, নরম অঙ্গগুলোকে সংরক্ষণ করে, দেহের ভার বহন করে এবং পেশী সংযোজনের জন্য উপযুক্ত স্থান সৃষ্টি করে তাকে কঙ্কালতন্ত্র বলে। কঙ্কালতন্ত্রের একটি উপাদান হলো তরুণাস্থি।
তরুণাস্থি কাকে বলে?
রক্তবাহিকাবিহীন, নমনীয়, মজবুত, অভঙ্গুর, স্থিতিস্থাপক গঠনবিশিষ্ট যোজক টিস্যুকে তরুণাস্থি বা কার্টিলেজ বলে। মানুষের নাক, কান, হিউমেরাস ও ফিমারের মস্তক, বিভিন্ন অস্থিসন্ধি, শ্বাসনালি, আন্তঃকশেরুকা চাকতি ইত্যাদিতে তরুণাস্থি থাকে।
তরুণাস্থির গঠন
১। প্রচুর পরিমাণ মাতৃকা (ম্যাট্রিক্স)ও স্বল্প সংখ্যক কোষ নিয়ে তরুণাস্থি গঠিত।
২। তরুণ অবস্থায় কোষগুলো কন্ড্রোব্লাস্ট এবং পরিণত অবস্থায় কন্ড্রোসাইট নামে পরিচিত।
৩। ম্যাট্রিক্স অর্ধ-কঠিন এবং কন্ড্রিন নামে পরিচিত। কন্ড্রোমিউকয়েড ও কন্ড্রোঅ্যালবুমিনয়েড নামক দু’প্রকার প্রোটিন দিয়ে কন্ড্রিন গঠিত।
৪। ম্যাট্রিক্সে ল্যাকুনা (lacuna, বহুবচনে lacunae) নামক তরলে পূর্ণ ছোট ছোট অনেক গহ্বর থাকে। প্রতিটি ল্যাকুনায় এক বা একাধিক কোষ দলবদ্ধভাবে অবস্থান করে।
৫। ম্যাট্রিক্সে কিছু তন্তুও থাকে। তন্তুর মধ্যে কোলাজেন তন্তুই প্রধান।
৬। প্রতিটি তরুণাস্থি পেরিকন্ড্রিয়াম নামক তন্তুময় যোজক টিস্যু নির্মিত একটি পাতলা আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে।
৭। আবরণী ও মাতৃকা ভেদ্য বলে তরুণাস্থি টিস্যুতে রক্তনালির প্রয়োজন হয় না। রক্তের বস্তুসমূহ ব্যাপনের মাধ্যমে কোষে প্রবেশে সক্ষম।
তরুণাস্থির কাজ
১। তরুণাস্থি বিভিন্ন অঙ্গের চাপ ও টান প্রতিরোধ করে।
২। এগুলো বিভিন্ন অঙ্গের আকৃতি গঠন করে।
৩। অস্থিসন্ধিতে এরা দুটি অস্থিকে সংযুক্ত হতে সহায়তা করে এবং অস্থির প্রান্তভাগকে ঘর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করে।
৪। ফাইব্রোকার্টিলেজ দেহের সবচেয়ে শক্তিশালি ও দৃঢ় তরুণাস্থি। এগুলো টেনডন ও লিগামেন্টকে অস্থির সাথে যুক্ত করতে সহায়তা করে।
৫। তরুণাস্থিতে লুব্রিসিন নামক গ্লাইকোপ্রোটিন থাকে যা কঙ্কালতন্ত্রে জৈব লুব্রিকেটর হিসেবে কাজ করে।
৬। তরুণাস্থি মেরুদণ্ডীদের ভ্রূণীয় কঙ্কাল ও কনড্রিকথিস জাতীয় মাছের অন্তঃকঙ্কাল গঠন করে।