Bangla

মেট্রোরেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিনলিপি

এখানে নিচে বাংলা ২য় পত্রের লিখিত অংশের মেট্রোরেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিনলিপি রচনা দেওয়া হলো।

বাংলা ২য় পত্র বা বাংলা ব্যাকরণের লিখিত অংশের গুরুত্বপূর্ণ টপিক হলো দিনলিপি রচনা। বর্তমান সময়ে একটি বহুল আলোচিত বিষয় হলো মেট্রোরেল। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রায়ই মেট্রোরেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিনলিপি রচনা এসে থাকে। তাই, দুই বন্ধুর মধ্যে মেট্রোরেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে দিনলিপি নিচে দেওয়া হলো।

১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

সকাল ৯টা। রাজধানীর কারওয়ানবাজার স্টেশনে প্রবেশের পর কিছুটা উত্তেজনা অনুভব করি। কিছুটা উচ্ছ্বসিতও। সব কিছু গোছানো। ঝকঝকে-তকতকে। ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে উঠছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। আছে নিরাপত্তাকর্মীদের কড়া নজরদারি। আমার গন্তব্য মতিঝিল। কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে প্ল্যাটফরমে প্রবেশ করলাম। মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া ৩০ টাকা। প্রসঙ্গত, মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা; সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। কোনো শ্রেণি বিভাজন নেই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ট্রেন এসে প্ল্যাটফরমে দাঁড়ালো। মোট ছয়টি বগি। পিক আওয়ারে যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা প্রতিটি বগি। আমার হাতে অনেক সময়। পরিবেশ-পরিস্থিতি না বুঝে হুট করে ট্রেনে ওঠা ঠিক হবে না ভেবে পরবর্তী ট্রেনের অপেক্ষায় রইলাম। পরের ট্রেন কত মিনিট পর পৌঁছাবে, ডিজিটাল স্ক্রিনে তা দেখানো হচ্ছে। যথাসময়ে এলো ট্রেন। নামার চেয়ে ওঠার যাত্রী বেশি। এবার কিছুতেই মিস করা যাবে না। ভিতরে ঢুকে ঠেলাঠেলি করে কোনো রকমে একটু জায়গা করে নিলাম। স্টেশন ছাড়ার পরপরই পরবর্তী স্টেশনের নাম ঘোষণা করা হলো। শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশনে যাত্রীদের উঠানামার জন্য ১৫-২০ সেকেন্ড করে থেমে মিনিট দশেকের মধ্যে ট্রেন পৌঁছে গেল মতিঝিল। তাজ্জব ব্যাপার কারওয়ানবাজার থেকে মতিঝিল ব্যক্তিগত গাড়িতেও অনেক সময় ঘণ্টা পার হয়ে যায়। নিউ ইস্কাটন রোডের দোকান কর্মচারী মো. হারেছ সরকার। এ পর্যন্ত চারবার মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছেন। তাঁর স্ত্রী উত্তরার দিয়াবাড়ীর কাছে বাসাভাড়া নিয়ে থাকেন। গার্মেন্টে চাকরি করেন। হারেছ জানালেন, মেট্রোতে ভিড় বেশি। ভাড়াও বেশি। কারওয়ানবাজার থেকে দিয়াবাড়ী ভাড়া ৮০ টাকা। অথচ বাসভাড়া মাত্র ৫০ টাকা। তবে এসব সত্ত্বেও অখুশি নন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মেট্রোরেলে ভাড়া বেশি হলেও সময় অনেক বাঁচে। ‘হারেছ জানালেন, মেট্রোরেলে কারওয়ানবাজার থেকে উত্তরা পৌঁছাতে সময় লাগে আধ ঘণ্টারও কম। অথচ বাসে প্রায় দুই ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। বিরক্তির শেষ নেই। স্টেশনে ওঠানামার জন্য সিঁড়ি, চলন্ত সিঁড়ি এবং লিফট আছে। সক্ষম বা ফিট ব্যক্তিরা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করবেন। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে যাদের সমস্যা, তারা চলন্ত সিঁড়ি ব্যবহার করবেন। প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের জন্য লিফট। কিন্তু এই শৃঙ্খলা অনেকেই মানেন না বলে অভিযোগ আছে। পাছে নামতে সমস্যা হয়, এই ভয়ে বগির দরজার মুখে দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকে। ভিতরে ফাঁকা জায়গা থাকা সত্ত্বেও দরজার মুখে জটলার কারণে অনেক যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারেন না। রাজধানী ঢাকাকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে মেট্রোরেল একটি সফল উদ্যোগ। নগর জীবনে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে মেট্রোরেল সেবা। বিদেশে মেট্রোরেল বা সাবওয়েতে চড়ার অভিজ্ঞতা আমার থাকলেও দেশের মাটিতে এই প্রথম। আমার সরল উপলব্ধি, ছোট হয়ে এসেছে আমার প্রিয় শহর ঢাকা।

তপন কুমার ঘোষ
সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনতা ব্যাংক লিমিটেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button