অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ২০২৪
HSC বাংলা প্রথম পত্রের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন এবং উত্তর নিচে প্রকাশ করা হলো।
এইচএসসি বা উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রের একটি গল্পের নাম অপরিচিতা। অপরিচিতা গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি ছোটগল্প। এই গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন এবং উত্তর নিচে দেয়া হলো।
অপরিচিতা গদ্যের সৃজনশীল প্রশ্ন
অপরিচিতা গল্পটি অনুপম নামের এক যুবকের প্রেমানুভূতির গল্প। এটি উত্তম পুরুষের জবানিতে লেখা অর্থাৎ অনুপমের নিজের জবানিতে লেখা। অনুপম সেই বাঙ্গালি যুবক যে ব্যক্তিত্বহীন। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করলেও পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুলমাত্র।
এই গল্পের অপরিচিতা নামের যে নারীর বর্ণনা দেয়া হয়েছে সে বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বর অধিকারী নারী। সে তৎকালীন সমাজে জেঁকে বসা ঘৃণ্য যৌতুকপ্রথার বিরোধীতা করেছে।
অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১: আর্থিক দুরবস্থার কারণে হায়দার আলী যৌতুকসহকারে মেয়ের বিয়ে দিতে অপারগ। অথচ মেয়ের বিয়ের বয়সও পার হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সম্ভ্রান্ত রাশেদ চৌধুরীর ছেলের সাথে তাঁর মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয় । মেয়ের বাবা হায়দার আলী ছেলের বাবা রাশেদ চৌধুরীকে হাতজোড় করে অনুরোধ জানান, যৌতুকের জন্য তিনি যেন এ বিয়ে ভেঙে না দেন। রাশেদ চৌধুরী তাঁকে জানান, ‘যৌতুক নিয়ে ছেলের বিয়ে দেওয়াকে আমি অপরাধ মনে করি। আমার কাছে মেয়ের বাবার টাকা নয় বরং মেয়ের শিক্ষাটাই আসল।
ক. অনুপমদের বাড়ি কোথায়?
খ. কল্যাণী কেন মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করেছিল?
গ. উদ্দীপকের হায়দার আলীর সঙ্গে ‘অপরিচিতা’ গল্পের শম্ভুনাথ সেনের বৈসাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. যৌতুকের মতো অভিশাপকে সমাজ থেকে দূর করতে রাশেদ চৌধুরীর মতো ব্যক্তিরাই আমাদের আশার আলো’— ‘অপরিচিতা’ গল্পের আলোকে তোমার মতামত তুলে ধরো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২: ইদের একদিন পরই অরুন্ধতির বিয়ে। বরপক্ষকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। ব্যাংক বন্ধের আগের দিন অরুন্ধতির বাবা চেক নিয়ে ব্যাংকের উদ্দেশে বের হলেন। কিন্তু রাস্তায় বের হয়ে জ্যামে আটকা পড়ে ব্যাংকে যখন পৌঁছালেন তখন ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। টাকাটা ব্যাংক থেকে ওঠাতে না পেরে অরুন্ধতির বাবা ভাবলেন, ওদের ক্যাশ টাকা না দিতে পারলেও চেকটা দিতে পারলেই তো হবে । কিন্তু যত সহজ করে তিনি চিন্তা করলেন, তত জটিল করেই চিন্তা করলেন বরের বাবা। বরের বাবাকে চেকটা দিতে গেলেই তিনি বললেন, এ চেকের মূল্য কী? ব্যাংকে যে টাকা আছে তার প্রমাণ কী? আমি এ চেক মানি না।’ অনেক অনুনয়-বিনয় করার পরও যখন বরের বাবা কিছুতেই মেনে নিলেন না তখন কনের বাবা খেপে গেলেন এবং বললেন, ‘যাদের এত অবিশ্বাস আমাদের ওপর, তাদের সাথে আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়তে চাই না।’
ক. ‘কন্সর্ট’ শব্দের অর্থ কী?
খ. শুনিয়া আমার মন পুলকের আবেশে ভরিয়া গেল’– কেন?
গ. উদ্দীপকের বরের বাবার সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের কোন চরিত্র সাদৃশ্যপূর্ণ বলে তুমি মনে করো? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের মূল কাহিনি আর ‘অপরিচিতা’ গল্পের মূল কাহিনিকে একসূত্রে গাঁথা যায় কি? যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: শীৰ কুণ্ডু তাঁর এমএ পাশ সুন্দরী মেয়ে স্বাতীকে বিয়ে দিয়েছিলেন ডা. বিশ্বনাথ কুণ্ডুর সাথে। বিয়ের সময় স্বাতীর বাবা ছেলের বাড়ির মনের মতো যৌতুক দেবার পরও বিশ্বনাথ কুণ্ডু ও তার মা স্বাতীকে চাপ দেয় তার বাবার কাছ থেকে আরও টাকা আনার জন্য। কিন্তু স্বাতী এর কোনো প্রতিবাদ না করায় শুরু হয় নির্যাতন। স্বাতী বাবাকে জানায় না নির্যাতনের কথা। একপর্যায়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয় সে।
ক. পুরাণের প্রজাপতি দেবতা কে?
খ. ‘যেন অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোটো ভাইটি’— বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের স্বাতীর সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর চরিত্রের তুলনা করো।
ঘ. যে কারণে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে যায়, স্বাতীর জন্য সেই একই কারণ দায়ী। বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: আমি বলিলাম, তা থাক না, সুরবালা আমার কে! উত্তর শুনিলাম, সুরবালা আজ তোমার কেহই নয়, কিন্তু সুরবালা তোমার কী না হইতে পারিত।
ক. বিয়ের সময় অনুপমের বয়স কত ছিল?
খ. কল্যাণীর ‘মাতৃ আজ্ঞার ধরন ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের সাদৃশ্য কোথায়? আলোচনা করো।
ঘ. উদ্দীপকে সুরবালা আর ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও বিচ্ছেদ বেদনা অভিন্ন”— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: ভারী একখানি সাদাসিধা মুর্খ, সাদাসিধা দুটি চোখ এবং সাদাসিধা একটি শাড়ি। কিন্তু সমস্তটি লইয়া কী যে মহিমা সে আমি বলিতে পারি না। যেমন তেমন একখানি চৌকিতে বসিয়া পিছনে একখানা ডোরা দাগ করা শতরঞ্জ ঝোলানো, পাশে একটা টিপাইয়ের ওপরে ফুলদানিতে ফুলের তোড়া। আর গালিচার উপরে শাড়ির বাঁকা পাড়টির নিচে দুখানি খালি পা।
ক. শম্ভুনাথ সেনের ব্যবহার কেমন?
খ. কারণ প্রমাণ হইয়া গেছে, আমি কেহই নই।’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘অপরিচিতা’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য ফুটে উঠেছে?
ঘ. “উদ্দীপকে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অংশবিশেষ প্রতিফলিত হয়েছে।” এ বিষয়ে তোমার মতামত যাচাই করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬: হৈমন্তী স্বভাবকোমল পবিত্র মাধুর্যময় লাবণ্যময়ী এক মেয়ে, যে যৌতুকপ্রথার যুপকাষ্ঠে নির্মম বলি হয়েছে। হৃদয়হীন স্বার্থান্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির নিষ্ঠুর আচরণে আর তার গুণমুগ্ধ অথচ পৌরুষহীন স্বামীর নিশ্চেষ্ট অসহায়তার মুখে সরল শুভ্র নিষ্ফলক সত্যব্ৰতী হৈমন্তী অকালে ঝরে পড়ে।
ক. কল্যাণী কোন স্টেশনে নেমেছিল?
খ. ‘অতএব বুঝিলাম, আমার ভাগ্যে প্রজাপতির সফো পঞ্চশরের কোনো বিরোধ নাই’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে হৈমন্তীর সঙ্গে ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর অমিলগুলো তুলে ধরো।
ঘ. “উদ্দীপকটি যৌতুকপ্রথার নির্মম বিবরণ, কিন্তু ‘অপরিচিতা’ গল্প যৌতুক ও নারীর অবমাননার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ।”— প্রমাণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭: মাতৃস্নেহের তুলনা নাই, কিন্তু অতিস্নেহ অনেক সময় অমঙ্গল আনয়ন করে। যে স্নেহের উত্তাপে সন্তানের পরিপুষ্টি, তাহারই আধিক্যে সে অসহায় হইয়া পড়ে। মাতৃহৃদয়ে মমতার প্রাবল্যে, মানুষ আপনাকে হারাইয়া আপন শক্তির মর্যাদা বুঝিতে পারে না। দুর্বল অসহায় পক্ষীশাবকের মতো চিরদিন স্নেহাতিশয্যে আপনাকে সে একান্ত নির্ভরশীল মনে করে। ক্রমে জননীর পরম সম্পদ সন্তান অলস, ভীরু, দুর্বল ও পরনির্ভরশীল হইয়া মনুষ্যত্ব বিকাশের পথ হইতে দূরে সরিয়া যায়। অন্ধ মাতৃস্নেহ সে কথা বোঝে না।
ক. অনুপম তার মাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছিল?
খ. শম্ভুনাথ বাবু অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে দিলেন না কেন?
গ. অন্ধ মাতৃস্নেহ অনুপমের চরিত্রে কতটুকু প্রভাব ফেলেছে? উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের মতো সীমাবদ্ধতাই অনুপম চরিত্রের একমাত্র দিক নয়, সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করার আনন্দও তার আছে।’- মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ করো ।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮: পুরুষশাসিত সমাজে শুধু পুরুষের অধিকারই চির প্রতিষ্ঠিত। সমাজে যেমন ব্রাহ্মণ বর্ণ শ্রেষ্ঠ গুরু, তেমনি সংসারে পুরুষ সর্বগুণে গুণান্বিত, এ সমাজে নারীর ওপর তার চিরকালের প্রভুত্বের দাবি। নিজেরা শক্তিশালী তাই নিজেরাই সমাজ গঠনের দায়িত্ব নিয়ে নারীর চির অবরোধের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
ক. অনুপম তাড়াতাড়ি গাড়ির জানালা খুলে মুখ বাড়িয়ে কী দেখল?
খ. গল্পকথকদের বাড়ির সকলে রেগে আগুন হলো কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘অপরিচিতা’ গল্পের কোন দিকটির সথে সাদৃশ্যপূর্ণ? বর্ণনা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘অপরিচিতা’ গল্পের আংশিক ভাবকে ধারণ করতে সমর্থ হয়েছে ‘মাত্র, সম্পূর্ণ ভাবকে নয়- বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৯: পাও, তাহার মাথাঘষার গন্ধ অনুভব করো, কিন্তু মাঝখান বরাবর একখানি করিয়া দেয়াল থাকিবে। আমি বলিলাম, তা থাক-না, সুরবালা আমার কে? উত্তর শুনিলাম, সুরবালা আজ তোমার কেহই নয়, কিন্তু সুরবালা তোমার কী না হইতে পারিত। সে কথা সত্য। সুরবালা আমার কী না হইতে পারিত। আমার সবচেয়ে অন্তরঙ্গ, আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী, আমার জীবনের সমস্ত সুখ-দুঃখভাগিনী হইতে পারিত— সে আজ এত দূর, এত পর, আজ তাহাকে দেখা নিষেধ, তাহার সঙ্গে কথা কওয়া দোষ, তাহার বিষয়ে চিন্তা করা পাপ।
ক. ‘অপরিচিতা’ গল্পে ‘প্রজাপতির সঙ্গে কীসের বিরোধ নেই বলে অনুপমের মনে হলো?
খ. মা কেন অনুপমকে ছাড়তে পারেননি?
গ. উদ্দীপকের সুরবালা এবং ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণীর সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আলোচনা করো।
ঘ. সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়, তা না হলে সারাজীবন অনুশোচনায় পুড়তে হয়- উদ্দীপক ও ‘অপরিচিতা’ গল্পের আলোকে উক্তিটির যথার্থতা যাচাই করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১০: ‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পে নারী তার ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নিয়ে হাজির হয়েছে। স্ত্রীর পরের মেজ বউ সমাজনীতির ধার ধারেনি, সংসারজাল থেকে সে নিজেকে মুক্ত করেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ নারীত্বের মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। রবীন্দ্রনাথ মেজ বউকে দিয়ে মিথ্যা অহমিকা, মেকি সমাজ আর সংস্কার থেকে বন্ধনচ্ছিন্ন করিয়েছেন। মেজ বউয়ের শেষ কথা, ‘তোমাদের গালিকে আমি আর ভয় করিনে। আমার সম্মুখে আজ নীল সমুদ্র, আমার মাথার উপরে আষাঢ়ের মেঘপুঞ্জ।’
ক. বিবাহ ভাঙার পর কল্যাণী কোন ব্রত গ্রহণ করেছে?
খ. ঠাট্টার সম্পর্কটিকে স্থায়ী করার ইচ্ছা আমার নেই’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের মেজ বউ ‘অপরিচিতা’ গল্পের কল্যাণী চরিত্রের যে বিশেষ গুণটি প্রকাশ করেছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের অনুপস্থিত মেজ বউ যেন ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপম”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।
আরো দেখুনঃ
এখানে এইচএসসি বাংলা ১ম পত্রের অপরিচিতা গল্পের মোট ১০টি সৃজনশীল প্রশ্ন দেওয়া হলো। এখান থেকে চাইলে এর পিডিএফও ডাউনলোড করা যাবে।