Bangla

বিলাসী গল্পের অনুধাবন প্রশ্নের উত্তর PDF [অনুধাবনমূলক]

HSC বাংলা প্রথম পত্রের শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বিলাসী গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন এবং উত্তর নিচে প্রকাশ করা হলো।

উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর বাংলা প্রথম পত্রের একটি গদ্যাংশের একটি গল্পের নাম বিলাসী। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘ভারতী’ পত্রিকায় ১৩২৫ বঙ্গাব্দের (১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ) বৈশাখ সংখ্যায়।

বিলাসী গদ্যের অনুধাবন প্রশ্নের উত্তর

‘বিলাসী’ গল্পে মৃত্যুঞ্জয় ও বিলাসী নামের দুই মানব-মানবীর অসাধারণ প্রেমের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে উচ্চবংশীয় মৃত্যুঞ্জয় নিম্নবর্ণের বিলাসীর সেবা-শুশ্রূষায় সুস্থ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের স্বার্থপর খুড়া সমাজে নানা রটনা রটায় এবং মৃত্যুঞ্জয়কে ভিটা থেকে উৎখাত করে। এরপরও মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীকে বিয়ে করে সংসার পাতে। কিন্তু তাদের এই সংসার বেশিদিন স্থায়ী হয় না। একদিন সাপ ধরতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয় মৃত্যুঞ্জয়কে। এ ঘটনার পর বিলাসীও আত্মহত্যা করে।

‘বিলাসী’ উত্তম পুরুষের জবানিতে সাধু ভাষায় লিখিত ছোটোগল্প। এখানে লেখকের সরল ও সাবলীল কাহিনি বর্ণনা তাঁর শিল্পকুশলতার পরিচয় প্রদান করে।

বিলাসী গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

এখানে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বিলাসী গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন বা অনুধাবনমূলক প্রশ্ন এবং এর উত্তর নিচে দেওয়া হলো-

অনুধাবন প্রশ্ন-১: “চার ক্রোশ মানে আট মাইল নয়, ঢের বেশি— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: গাণিতিকভাবে চার ক্রোশ মানে আট মাইল হলেও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে গল্পকথকদের যাতায়াতের পথ দীর্ঘতর হয়ে উঠত বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে। লেখক ও তার সহপাঠীদের প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের জন্য দীর্ঘ চার ক্রোশ পথ অতিক্রম করতে হতো। কিন্তু বর্ষার দিনে মেঘের জল, এক হাঁটু কাদা এবং গ্রীষ্মের দিনের খরতাপ ও ধুলার কারণে সেই চার ক্রোশ পথ আরও বেশি দীর্ঘ বলে মনে হতো। এ ব্যাপারটি স্পষ্ট করে তুলতেই লেখক উপরিউক্ত ব্যঙ্গাত্মক উক্তিটির আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

অনুধাবন প্রশ্ন-২: মা সরস্বতী খুশি হইয়া বর দিবেন কি, তাহাদের যন্ত্রণা দেখিয়া কোথায় যে তিনি লুকাইবেন, ভাবিয়া পান না’ – উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: তৎকালীন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যার্জনের ক্লেশ প্রসঙ্গে প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে। ন্যাড়া, মৃত্যুঞ্জয়সহ শিক্ষার্থীদের তখন বহু কষ্টে দুই ক্রোশ পথ অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হতো। প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে এ পথ যেন আরও দুর্গম হয়ে উঠত। এত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করে শেষ পর্যন্ত গ্রামের ছেলেদের পরীক্ষার ফল আশানুরূপ হতো না। তৎকালীন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালাভের এই বিড়ম্বনাকে বোঝাতেই লেখক প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩: “তারা বাস করিতে থাকিলে তো পল্লির এত দুর্দশা হয় না।” – ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে সংগতিপূর্ণ ব্যক্তিরা পল্লির প্রতি মনোযোগী হলে সেখানকার দুর্দশা লাঘব হতো বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে। পল্লি অঞ্চলে ঋতুভেদে জল, কাদা এবং প্রখর সূর্যতাপ ও ধুলোর পথ পার হয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্তের স্কুলে যেত। লেখক মনে করেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা যদি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য শহরে পাড়ি না জমিয়ে পল্লি অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতেন এবং শহরে বসবাসকারী শিক্ষিত উঁচুতলার মানুষেরা যদি পল্লির দিকে সামান্য সুনজর দিতেন, তবে পল্লির এ দুর্দশা আর থাকত না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে লেখকের এমন মনোভাবই প্রকাশিত হয়েছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৪: কোন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে খুড়া মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের সম্পত্তি দখল করার উদ্দেশ্যেই খুড়া তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে। এক জ্ঞাতি খুড়া ছাড়া মৃত্যুঞ্জয়ের মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ ছিল না। তবে গ্রামের এক প্রান্তে একটি প্রকাণ্ড আম-কাঁঠালের কুড়ি- পঁচিশ বিঘার বাগান ছিল তার। খুড়া দাবি করত ঐ বাগানের অর্ধেক অংশ তার প্রাপ্য। মৃত্যুঞ্জয়কে তাড়িয়ে সেই বাগানটি হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই সে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করত।

অনুধাবন প্রশ্ন-৫: মৃত্যুঞ্জয় নিজে রেধে খেত কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মা-বাবা বা পরিজন না থাকায় মৃত্যুঞ্জয় নিজের খাবার নিজেই রান্না করে খেতো। মৃত্যুঞ্জয় একটি বিশাল পুরনো বাড়িতে একা থাকতো। এক জ্ঞাতি খুড়া ছাড়া তার মা-বাবা বা পরিজন কেউ ছিল না। সেই খুড়াও আবার তার কুৎসা রটাত। ফলে তার দেখভালের মতো মানুষের অভাব ছিল। এ কারণে নিজের রান্নার দায়িত্ব মৃত্যুঞ্জয় নিজের কাঁধে তুলে নেয়। উত্তরের সারবস্তু: মা-বাবা বা পরিজন না থাকায় মৃত্যুঞ্জয় নিজের খাবার নিজেই রান্না করে খেতো।

অনুধাবন প্রশ্ন-৬: ‘গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের ছিল এমনি সুনাম’ – ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের নেতিবাচক ভাবমূর্তিকে ব্যঙ্গার্থে ‘সুনাম’ বলা হয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে উদ্ধৃত উক্তিতে ‘সুনাম’ শব্দটি গল্পকথক ন্যাড়া ‘দুর্নাম’ অর্থে ব্যবহার করেছে। আত্মীয়-পরিজনহীন মৃত্যুঞ্জয়ের এক জ্ঞাতি খুড়া ছিল। সে তার নামে দুর্নাম রটনা করে বেড়াত। দুর্নাম প্রচারের কল্যাণে গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের এমন একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল যে, গ্রামবাসী তার সঙ্গে প্রকাশ্যে মেলামেশা দূরে থাক, তার সঙ্গে সংশ্রব থাকার কথাটা পর্যন্ত স্বীকার করত না। নিজ গ্রামে মৃত্যুঞ্জয়ের এমন নেতিবাচক ভাবমূর্তি প্রসঙ্গেই গল্পটিতে উদ্ধৃত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৭: ‘অনেকদিন মৃত্যুঞ্জয়ের দেখা নাই’- ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী থাকার কারণে তার সঙ্গে গল্পকথক ন্যাড়ার দেখা নেই।মৃত্যুঞ্জয় একটি বিশাল পুরনো বাড়িতে একা থাকতো। এক জ্ঞাতি খুড়া ছাড়া তার মা-বাবা বা পরিজন কেউ ছিল না। সেই খুড়াও আবার তার নামে কুৎসা রটাত । একবার তার অসুখ হলে দেখাশোনার মতো কেউ না থাকায় দীর্ঘদিন সে শয্যাশায়ী ছিল। দীর্ঘ এই অসুস্থতার কারণেই অনেকদিন মৃত্যুঞ্জয়ের সাথে গল্পকথক ন্যাড়ার দেখা হয়নি।

অনুধাবন প্রশ্ন-৮: ‘অনেক দিন তাহার মিষ্টান্নের সদ্ব্যয় করিয়াছি— মনটা কেমন করিতে লাগিল’- কথাটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: গল্পকথকসহ মৃত্যুঞ্জয়ের অন্য বন্ধুরা মাঝেমধ্যেই তার কিনে দেওয়া মিষ্টান্ন খেয়েছেন আর তাই অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের কথা ভেবে তার মন খারাপ হলো। মৃত্যুঞ্জয় ছিল উদার প্রকৃতির। গ্রামের ছেলেমেয়েদের মাঝেমধ্যেই বই কেনার টাকাসহ এটা সেটা দিয়ে সাহায্য করত সে। শুধু তাই নয়, গল্পকথকসহ অন্য বন্ধুদের মাঝেমধ্যেই দোকানের মিষ্টান্ন কিনে দিত সে। আর তাই মৃত্যুঞ্জয়ের অসুস্থতার কথা ভেবে গল্পকথকের মন কেমন করতে লাগলো। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে এ বিষয়টিই প্রকাশিত হয়েছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৯: মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিচয় দাও।

উত্তর: ‘বিলাসী’ গল্পে গল্পকথক ন্যাড়ার বর্ণনায় মৃত্যুঞ্জয়ের জঙ্গলাকীর্ণ বাড়ির পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিচয় পাওয়া যায়। মৃত্যুঞ্জয়ের বাস ছিল গ্রামের এক প্রান্তে, বিশ-পঁচিশ বিঘা আয়তনের প্রকাণ্ড এক আম-কাঁঠালের বাগানের মধ্যে বিশাল একটা পোড়োবাড়িতে। এ পোড়োবাড়িতে প্রাচীরের বালাই ছিল না। স্বচ্ছন্দে যে কেউ বাড়ির ভেতরে ঢুকতে বা বের হতে পারত। রাতের অন্ধকারে ঘন জঙ্গল বাড়ির পরিবেশকে ভুতুড়ে ও ভীতিজনক করে তুলত।

অনুধাবন প্রশ্ন-১০: ‘তাহার বয়স আঠারো কি আটাশ ঠাহর করিতে পারিলাম না’— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের সেবা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যহানির শিকার হওয়া বিলাসীকে দেখে গল্পকথক ন্যাড়া আলোচ্য মন্তব্যটি করেছে। মৃত্যুঞ্জয়ের রোগাক্রান্ত হলে বিলাসী দিনরাত সেবা-যত্ন করে তাকে সুস্থ করে তুলেছে। তাকে সুস্থ করতে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমে বিলাসীর নিজের স্বাস্থ্যহানি হয়েছে। তাই ন্যাড়া যখন তাকে দেখেছে, তখন সে বিভ্রান্তিতে পড়েছে। তার বয়স আসলে কত হবে তা সে বুঝে উঠতে পারেনি। এ অবস্থায় বিলাসীর স্বাস্থ্যহানি প্রসঙ্গেই ন্যাড়া উদ্ধৃত উক্তিটির অবতারণা করেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-১১: ‘ঠিক যেন ফুলদানিতে জল দিয়া ভিজাইয়া রাখা বাসি ফুলের মতো’— কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: উদ্ধৃত উক্তিটির মাধ্যমে অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের সেবারত বিলাসীর অবস্থা বোঝানো হয়েছে। ‘বিলাসী’ গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়লে বিলাসী রাতের পর রাত জেগে তার সেবা-শুশ্রূষা করে। এই নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রমে বিলাসী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তার সারা শরীরে একটা অপরিসীম ক্লান্তি ও নিরবচ্ছিন্ন রাত জাগার ছাপ পড়ে যায়। তার এ সজীবতাহীন ও অবসন্ন শরীরকে গল্পের কথক তুলে ধরেছে উক্তিটির মাধ্যমে।

অনুধাবন প্রশ্ন-১২: ন্যাড়া বিলাসীকে ‘ফুলদানিতে ভিজিয়ে রাখা বাসি ফুল’ বলেছিলেন কেন?

উত্তর: অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে শ্রান্ত, ভগ্নস্বাস্থ্য বিলাসীকে দেখে ন্যাড়া ‘ফুলদানিতে ভিজিয়ে রাখা বাসি ফুল’-এর প্রতীকে তার পরিচয় প্রকাশ করেছিল। ‘বিলাসী’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিলাসীকে গল্পকথক ন্যাড়া প্রথম দেখে মৃত্যুঞ্জয়ের রোগ-সজ্জায়। দিন-রাত অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের প্রাণপণ সেবা করে অস্পৃশ্য মালোর মেয়ে। বিলাসীর তখন এমনই করুণ চেহারা যে, দেখে বোঝার উপায় ছিল না তার বয়স আঠারো নাকি আটাশ। ন্যাড়া তার ভগ্ন-শরীর আর ম্লান-সৌন্দর্য দেখে বুঝেছিল, যমরাজকে নিরস্ত করতে সেবাব্রতী বিলাসীকে কত কঠিন পরিশ্রমই না করতে হয়েছে। তাই ন্যাড়া ‘ফুলদানিতে ভিজিয়ে রাখা বাসি ফুল’-এর প্রতীকে বিলাসীর পরিচয় প্রকাশ করেছিল।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৩: বিলাসী কেন ন্যাড়াকে অন্ধকার রাতে বাগান পার করে দিতে চেয়েছিল?

উত্তর: অন্ধকার রাতে অনভ্যস্ত ন্যাড়ার পক্ষে বাগানের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে বিলাসী তাকে বাগান পার করে দিতে চেয়েছিল। অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে দেখে ফিরতে ন্যাড়ার বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল। বাইরে ছিল গভীর অন্ধকার। এমন অন্ধকারে কুড়ি-পঁচিশ বিঘার বাগান পার হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ফেরার পথে বিলাসী আলো হাতে ভাঙা প্রাচীর পর্যন্ত ন্যাড়ার সঙ্গে আসে। কিন্তু তারপরও বিলাসীর উদ্বেগ কমেনি। রাতে বাগানের পথের কীরূপ অবস্থা হতে পারে তা অনুমান করেই সে ন্যাড়াকে বাগান পার করে দিতে চেয়েছিল।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৪: ‘মেয়ে মানুষ জিজ্ঞাসা করে, ভয় করবে না তো’— উক্তিটির ব্যাখ্যা দাও।

উত্তর: রাতের বেলায় গল্পকথক ন্যাড়ার একাকী বাড়ি ফেরার বিষয়ে উদ্বিগ্ন বিলাসীর প্রশ্নের প্রতিক্রিয়ায় তার মনে সংকোচের উদয় হয় ‘বিলাসী’ গল্পে গল্পকথক ন্যাড়া একদিন রোগগ্রস্ত মৃত্যুঞ্জয়কে দেখতে যায়। বাড়ি ফিরতে রাত অধিক হয়ে যাওয়ায় বিলাসী তার কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। অন্ধকার রাতে বিশাল আমবাগান পার হয়ে একা বাড়ি ফিরতে ভয় পাবে কি না— বিলাসীর এমন প্রশ্নে ন্যাড়ার পৌরুষে আঘাত লাগে। সংগত কারণেই ন্যাড়া সংকোচবোধ করছিল। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে এ বিষয়টিই প্রকাশিত হয়েছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৫: ‘ঘন জঙ্গলের পথ, একটু দেখে পা ফেলে যেয়ো’- ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: আলোচ্য উক্তিটিতে ন্যাড়া জঙ্গলের পথ ধরে বাড়ি পৌঁছতে কোনো সমস্যায় পড়তে পারে বলে বিলাসীর আশঙ্কা প্রকাশিত হয়েছে। এক সন্ধ্যায় গল্পকথক ন্যাড়া লুকিয়ে অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে দেখতে যায়। ততদিনে শয্যাশায়ী মৃত্যুঞ্জয়ের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কথাবার্তা শেষে বাড়ি ফেরার সময় বিলাসী ন্যাড়াকে ভাঙা প্রাচীর পর্যন্ত এগিয়ে দেয়। অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে একা রেখে ন্যাড়াকে এর বেশি এগিয়ে দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই দীর্ঘ জঙ্গল পথে সাপ থাকতে পারে এই আশঙ্কায় ন্যাড়াকে সাবধান থাকার জন্য সে অনুরোধ করে।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৬: ‘ভয় পাইবার আর সময় পাইলাম না’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: গল্পের কথক ন্যাড়ার রাতের অন্ধকারের সহজাত ভয় বা ভীতিকর চিন্তাভাবনার উদ্রেক না ঘটার কারণ বিলাসীকে নিয়ে ভাবনা । অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে দেখে ফেরার পথে বিলাসী গল্পের কথক ন্যাড়াকে এগিয়ে দিতে আসে। বিশাল আম বাগানের ঘন অন্ধকারে সাপের ভয় উপেক্ষা করে বিলাসী ন্যাড়াকে এগিয়ে দেয়। বিলাসীর এরকম সাহসিকতাপূর্ণ পরোপকারী মনোভাব ন্যাড়াকে এমনভাবে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে যে, পরবর্তী পথের সাপ বা অন্য কিছুর ভয় ন্যাড়ার চিন্তাতে ক্ষণিকের জন্যও আসে না।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৭: ‘একটা মৃতকল্প রোগী লইয়া থাকা কত কঠিন’- ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে নিয়ে বিলাসীর জঙ্গল ঘেরা বাড়িতে বিনিদ্র রাত কাটানোর দুঃসহ অবস্থাকে বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় একটি বিশাল পোড়োবাড়িতে একা থাকতো। মৃত্যুপথযাত্রী মৃত্যুঞ্জয়কে নিয়ে সেখানে কারও পক্ষে একা থাকাটা সত্যিকার অর্থেই কঠিন ছিল । এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যুঞ্জয় মারা গেলে মৃতদেহ নিয়ে বিলাসীকে একা রাত জাগতে হতো। অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে নিয়ে বিলাসীর এমন দুঃসহ দিনযাপনের বিষয়টি চিন্তা করেই লেখক প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৮: “ওরে বাপরে, আমি একলা থাকতে পারব না।” উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: উক্তিটির মাধ্যমে ন্যাড়া তার এক আত্মীয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তার মেকি স্বামীপ্রেমের প্রতি ইঙ্গিত করেছে। ‘বিলাসী’ গল্পে ন্যাড়ার এক আত্মীয় মারা গেলে তার বিধবা স্ত্রী শোকাহত হয়ে স্বামীর সঙ্গে সহমরণের জন্য হাহাকার করতে থাকে। কিন্তু লাশের পাশে তাকে একাকী রেখে ন্যাড়া যখন মৃতের সৎকারের জন্য লোক ডাকতে বাইরে পা বাড়ায়, তখনই সে চিৎকার করে উদ্ধৃত উক্তিটি করে। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, বহুদিনের সাহচর্য সত্ত্বেও স্বামীর সঙ্গে তার কোনো আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। এভাবে উক্তিটির মধ্য দিয়ে তার মেকি স্বামীপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-১৯: ‘বুক যদি কিছুতে ফাটে তো সে এই মৃত স্বামীর কাছে একলা থাকিলে’— কেন?

উত্তর: একসঙ্গে বহুকাল বসবাস করেও শুধু ভালোবাসার অভাবে অনেক নারী মৃত্যুভয়কে জয় করতে পারে না; তাই মৃত একলা থাকতে ভয়ে তাদের বুক ফাটে স্বামীর কাছে বহুকাল একসঙ্গে সংসার করার পরও অনেক স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা তৈরি হয় না। এ কারণে তারা স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুশোক সইতে পারলেও মৃতদেহটাকে মুহূর্তকাল সহ্য করার সাহস পায় না। স্বামীর মৃত্যুশোকে তাদের যতটা না বুক ফাটে, তার চেয়ে বেশি বুক ফাটে মৃত স্বামীর কাছে একলা থাকার ভয়ে। প্রকৃতপক্ষে, ভালোবাসার অভাবেই স্বামীর মৃতদেহ তাদের মধ্যে ভয়ের উদ্রেক করে। এ বিষয়টিকে বোঝাতেই গল্পকার প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করেছেন।

অনুধাবন প্রশ্ন-২০: ‘ইহা আর একটি শক্তি – বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ‘ইহা আর একটি শক্তি’— কথাটি দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার প্রকৃত ভালোবাসার প্রসঙ্গকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী বহুবছর একত্রে বসবাস করলেও সত্যিকারের ভালোবাসার সন্ধান খুব কম যুগলই পায়। আলোচ্য গল্পে প্রসঙ্গক্রমে গল্পকথক উ এক আত্মীয়ার উদাহরণ টেনেছেন। সেই নারী স্বামীর সাথে পঁচিশ বছর ঘর করেছে। অথচ স্বামীর মৃতদেহ আগলে পাঁচ মিনিটও এক থাকার সাহস তার নেই। এর কারণ প্রকৃত ভালোবাসার সম্পর্কের অনুপস্থিতি। স্বামীর মৃতদেহের কাছে থাকার জন্য প্রয়োজন ছিল ত একটি শক্তি’ অর্থাৎ খাঁটি ভালোবাসা। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে এ বিষয়টিই ইঙ্গিতময় হয়ে উঠেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২১: ‘ইহা আর একটি শক্তি, যাহা বহু স্বামী-স্ত্রী একশ বৎসর একত্রে ঘর করার পরেও হয়তো তাহার কোনো সন্ধান পায় না।’- উক্তিটির মর্মার্থ লেখো।

উত্তর: আমাদের সমাজব্যবস্থায় বিয়ে একটা চুক্তিমাত্র (লেখকের ভাষায় ‘Contract’) মনে হওয়ার ফলে অধিকাংশ স্বামী-স্ত্রী একত্রে সংসার করলেও কখনোই পরস্পরের মনোজগতের নৈকট্য লাভ করতে পারে না। ‘বিলাসী” গল্পের কথক ন্যাড়া এক নারীর স্বামীর মৃত্যুমুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন। তিনি দেখতে পেলেন যে স্বামীর সঙ্গে ওই নারী এত বছর ঘর করলেন, ভয়ে সেই স্বামীর লাশের পাশে পাঁচ মিনিটও একা থাকতে তিনি রাজি নন। সংগত কারণেই তার উপলব্ধি হয় যে, শুধু সংসার করলেই স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের কাছাকাছি আসতে পারে না। এজন্য প্রয়োজন পরস্পরের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা। আমাদের দেশে নর-নারীর মাঝে সেই ব্যাপারটি কম বলেই বহু স্বামী-স্ত্রী আজীবন ঘর সংসার করলেও পরস্পরের মনোজগতের সন্ধান পায় না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মাধ্যমে এ বিষয়টিই ইঙ্গিতময় হয়ে উঠেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২২: এ যে মিত্তির বংশের নাম ডুবিয়া যায়— উক্তিটি কেন করা হয়েছিল?

উত্তর: কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের নিষ্ঠুর জাত-কুল-ভেদের কারণে উক্তিটি করা হয়েছে। মৃতপ্রায় মৃত্যুঞ্জয়ের সেবা-শুশ্রূষায় এগিয়ে আসে নিচু বংশের সাপুড়েকন্যা বিলাসী। অসুস্থতার এক পর্যায়ে মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীর রান্না করা ভাত খায়। কিন্তু আচারসর্বস্ব কুসংস্কারাশ্রয়ী তৎকালীন হিন্দু সমাজে এটি ছিল অনেক বড় ধরনের পাপ, যেটিকে অন্নপাগ বলা হতো। মৃত্যুঞ্জয় অন্নপাপ করায় বংশের মান ডুবেছে— মৃত্যুঞ্জয়ের অমঙ্গলপ্রত্যাশী লোভী খুড়া এই ব্যাপারটিই ফলাও করে বলছিল। মৃত্যুঞ্জয়কে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এবং সে জন্যই আলোচ্য উক্তিটি সে করেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৩: খুড়া মৃত্যুঞ্জয়কে অন্নপাপের জন্য কেন দায়ী করেছে?

উত্তর: অন্নপাপের জন্য মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া মৃত্যুঞ্জয়কে দায়ী করেছে নিচু জাতের বিলাসীর হাতে ভাত খাওয়ার কারণে। তৎকালীন মূঢ় হিন্দু সমাজব্যবস্থায় জাত প্রথার বিষবাষ্প ছিল প্রবল। নিচু জাতের কারো হাতে রান্না করা খাবার বিশেষত ভাত খেলে অন্নপাপ হয় বলে অন্নপাপকে সকল পাপের বড় পাপ বলে মনে করা হতো এবং এর কোনো প্রায়শ্চিত্তও নেই। অসুস্থ মৃত্যুপথযাত্রী মৃত্যুঞ্জয়ের শুশ্রূষা করতে আসা তৎকালীন হিন্দুসমাজের চোখে নিচু বলে আখ্যায়িত সাপুড়েকন্যা বিলাসীর হাতে মৃত্যুঞ্জয়ের ভাত খাওয়ার কারণেই মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া মৃত্যুঞ্জয়কে অন্নপাপের জন্যে দায়ী করেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৪: মৃত্যুঞ্জয় গ্রামের মুখ পোড়ায় কীভাবে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সাপুড়েকন্যা বিলাসীকে বিয়ে করায় উঁচু বর্ণের মৃত্যুঞ্জয়ের গ্রামের মুখ পোড়ে। মৃত্যুঞ্জয় যখন দীর্ঘদিন রোগশয্যায় ছিল তখন বিলাসী প্রাণপণ সেবা-শুশ্রূষা করে তাকে রোগমুক্ত করে। বিলাসীর আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে মৃত্যুঞ্জয় তাকে ভালোবেসে বিয়ে করে। উঁচু-নিচু নানান সম্প্রদায়ে বিভক্ত তৎকালীন সমাজ এ বিয়েকে মেনে নেয়নি। উপরন্তু ঘটনাটিকে তারা গ্রামের মুখ পোড়ানো বলে অভিহিত করে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৫: ‘বাবা আমারে বাবুর সাথে নিকা দিয়েছে জানো’- কথাটি দ্বারা বিলাসী কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তর: উক্তিটির মাধ্যমে বিলাসী তার অধিকার ও নৈতিক ভিত্তিকে মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া ও তার দলবলের সামনে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রকাশ করে। মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া সমাজের দোহাই দিয়ে একদিন সন্ধেবেলা দশ- বারোজন লোক সঙ্গে নিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের পোড়োবাড়িতে গিয়ে বিলাসীকে উদ্দেশ করে কটু মন্তব্য করলে আলোচ্য উক্তির মাধ্যমে বিলাসী প্রতিবাদ করে তার প্রকৃত অবস্থান জানিয়ে দেয়।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৬: “এখন শুধু ইংরাজকে কষিয়া গালিগালাজ করিতে পারিলে দেশটা উদ্ধার হইয়া যায়।”— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: উদ্ভূত উক্তিতে সংকীর্ণতার বেড়াজালে বন্দি তৎকালীন সমাজে বিদ্যমান নানা কুসংস্কারের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ‘বিলাসী’ গল্প রচনাকালে এদেশের অধিকাংশ পল্লি ছিল শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। ফলে ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক অনাচার আর অশিক্ষা-কুশিক্ষায় সমাজ ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত। সে যুগে ইংরেজ প্রশাসন শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি ও সমাজসংস্কারমূলক নানা পদক্ষেপ নিলেও রক্ষণশীল হিন্দুরা ভালোভাবে নেয়নি। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে রক্ষণশীলদের এ মানসিক দৈন্যকে তীব্রভাবে বিদ্রূপ করা হয়েছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৭: ‘আমরা বলি যাহারই গায়ে জোর নাই, তাহারই গায়ে হাত তুলিতে পারা যায়’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: তৎকালীন নিষ্ঠুর হিন্দু সমাজব্যবস্থায় দুর্বলের উপর যে -অত্যাচার করা হতো, সে প্রসঙ্গেই উক্তিটি উত্থাপিত হয়েছে গল্পকথক ন্যাড়ার মাধ্যমে। ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন পাশ্চাত্য দেশে শারীরিকভাবে দুর্বল বলে নারীদের গায়ে হাত না তোলার একটি রীতি প্রচলিত ছিল। কিন্তু তৎকালীন আচারসর্বস্ব হিন্দু সমাজ ছিল দুর্বলদের জন্য আরও অনেক নিষ্ঠুর। তাই তারা দুর্বল বলে নারীদের ওপর হাত তুলতে কুণ্ঠিত নয় বরং সিদ্ধহস্ত। ‘বিলাসী’ গল্পে সমাজের নিষ্ঠুর লোকদের প্রহারের শিকার বিলাসীর ওপর এই শারীরিক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে ন্যাড়া উক্তিটি করেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৮: বিলাসীকে কেন টেনে-হিঁচড়ে গ্রামের বাইরে নেওয়া হলো? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: নিষ্ঠুর সামাজিক লোকাচারের অন্যতম সৃষ্টি অন্নপাপ সংঘটনের কারণেই বিলাসীকে টেনে-হিঁচড়ে গ্রামের বাইরে নেওয়া হলো । মৃতপ্রায় মৃত্যুঞ্জয়ের সেবা-শুশ্রূষায় এগিয়ে আসা বিলাসীর রান্না করা ভাত খায় মৃত্যুঞ্জয়। কিন্তু তৎকালীন কুসংস্কারাশ্রয়ী সমাজের চোখে নিচু শ্রেণির কারো হাতে ভাত খাওয়া ছিল ঘোর পাপ, সেটি অন্নপাপ। এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত নেই, এটি ছিল সেই সমাজের ভাবনা। পাপের ছোঁয়া যেন তাদের গায়ে না লাগে, সেই জন্যই নিষ্ঠুর সমাজের নিষ্ঠুর মানুষগুলো প্রায়শ্চিত্তের অভিপ্রায়ে দুর্বল বিলাসীকে টেনে-হিঁচড়ে গ্রামের বাইরে নিয়ে যায়।

অনুধাবন প্রশ্ন-২৯: ‘বাবুরা, আমাকে একটি বার ছেড়ে দাও আমি রুটিগুলো ঘরে দিয়ে আসি’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: নিজের বিপদ উপেক্ষা করে অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের জন্য উদ্বেগ প্রকাশের দিকটিই ফুটে উঠেছে আলোচ্য উক্তিতে মৃত্যুশয্যাশায়ী মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীর রাঁধা ভাত খায়, যেটি তৎকালীন সমাজের চোখে অন্নপাপ বলে প্রতীয়মান ছিল। সেই কুসংস্কারাশ্রয়ী সমাজের চোখে অন্নপাপ ছিল ঘোরতর আপত্তিকর এবং এই পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য তারা বিলাসীকে শাস্তি দিতে উদ্যত হয়। যখন তারা বিলাসীকে গ্রাম থেকে বের করে দিতে যায় তখন বিলাসী অসুস্থ, একাকী মৃত্যুঞ্জয়ের জন্য রুটি বানাচ্ছিল। অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয় খেতে পাবে না, এই উদ্বেগ থেকেই বিলাসী উক্তিটি করেছিল।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩০: ‘কে বলিবে এ আমাদের সেই মৃত্যুঞ্জয়’- উক্তিটি বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: ‘বিলাসী’ গল্পে কায়স্থ ঘরের সন্তান মৃত্যুঞ্জয়ের সাপুড়ে রূপ দেখে গল্পকথক ন্যাড়া উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে। অন্ত্যজ শ্রেণির মেয়ে বিলাসীকে বিয়ে করায় অনুদার ও রক্ষণশীল হিন্দুসমাজ কর্তৃক মৃত্যুঞ্জয়কে গ্রামছাড়া হতে হয়। কিন্তু এতে সে দমে যায়নি। জাত বিসর্জন দিয়ে বছরখানেকের মধ্যেই সে পুরোদস্তুর সাপুড়ে হয়ে ওঠে। মাথায় গেরুয়া পাগড়ি, বড়ো বড়ো দাড়ি-চুল, গলায় রুদ্রাক্ষ ও পুঁতির মালায় সজ্জিত মৃত্যুঞ্জয়কে দেখে বোঝার উপায় থাকে না যে, কোনো একসময় সে কায়স্থ ঘরের সন্তান ছিল। জাত বিসর্জন দেওয়ার পর স্বল্প সময়েই সে নিজেকে এমনভাবে পরিবর্তন করেছিল যে, ন্যাড়া পর্যন্ত অবাক না হয়ে পারেনি। আলোচ্য উক্তিটিতে মৃত্যুঞ্জয়কে নিয়ে গল্পকথক ন্যাড়ার সেই উপলব্ধিই ফুটে উঠেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩১: মৃত্যুঞ্জয়ের ‘জাত বিসর্জনের’ কারণ বর্ণনা করো।

উত্তর: স্বার্থান্বেষী খুড়ার চক্রান্ত ও তৎকালীন বর্ণবিভক্ত সমাজের অনৈতিক অনুশাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুঞ্জয় জাত বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়। বিলাসীর আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে মৃত্যুঞ্জয় তাকে বিয়ে করে। উচ্চবর্ণের হয়ে নিম্নবর্ণের বিলাসীকে বিয়ের বিষয়টি তৎকালীন বর্ণবিভক্ত সমাজ ভালোভাবে নেয়নি। এমতাবস্থায় সম্পদলোভী মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়াও বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে। এরই অংশ হিসেবে বিলাসীর হাতে মৃত্যুঞ্জয়ের অন্নগ্রহণের অজুহাতে গ্রামের মানুষ বিলাসীকে টেনে-হিঁচড়ে গ্রামের বাইরে বের করে দেয়। এ ধরনের অন্যায়, অত্যাচার ও অমানবিক আচরণের শিকার হয়ে শেষাবধি মৃত্যুঞ্জয় জাত বিসর্জন দিয়ে মালো সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে সাপুড়ে হয়ে ওঠে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩২: মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তঃকরণে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কারণ কী?

উত্তর: পঙ্কিল সমাজের বাইরে একাকী বেড়ে ওঠার কারণেই মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তঃকরণ অসাম্প্রদায়িক চেতনা-সমৃদ্ধ। তৎকালীন হিন্দু সমাজব্যবস্থা ছিল মূঢ়, মানবিকতাবিরোধী, শুভ বুদ্ধি-শুভচিন্তার প্রতিপক্ষ। এমন সমাজ ব্যবস্থায় সমাজের তথাকথিত আচারসর্বস্ব নিষ্ঠুর মানুষদের সাথে মিশে বেড়ে উঠে অসাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ হওয়া অসম্ভব। একাকী জীবন কাটানোর কারণেই সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকার মৃত্যুঞ্জয়কে গ্রাস করতে পারেনি বলেই মৃত্যুঞ্জয় অসাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৩: সাপ ধরার মন্ত্রের সত্য-মিথ্যার মীমাংসা হলো কীভাবে?

উত্তর: সাপের কাপড়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর মাধ্যমেই সাপ ধরার মন্ত্রের সত্য-মিথ্যার মীমাংসা হয়ে গেল। সাপ ধরার একটি মন্ত্র রয়েছে যেটিকে বিষহরির আজ্ঞা বলা হয়। সেই মন্ত্র বলে সাপকে পোষ মানানো যায়, সাপকে যা বলা যায় সাপ তাই করতে বাধ্য হয়। কিন্তু এটিও ছিল নিছক অন্ধ-বিশ্বাস। গোয়ালার বাড়িতে সাপ ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়েই বিষহরির আজ্ঞা যে নেহায়েত একটি কুসংস্কার, সেটিই প্রমাণিত হয়।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৪: ন্যাড়াকে কোন পাপের দণ্ড দিতে হয়েছিল? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সাপ ধরার ব্যাপারটি যে ঝুঁকির ব্যাপার, এটি মাথায় না রাখার প্রায়শ্চিত্ত ন্যাড়াকে করতে হয়েছিল। সাপ ধরা ব্যাপারটিকে ন্যাড়া আর মৃত্যুঞ্জয় আনন্দের একটি কাজ হিসেবে নিয়েছিল। এটি যে ভয়ের সেই ভাবনা ন্যাড়ার মনে কখনোই আসেনি এবং এটি আনন্দের ব্যাপার বলে সাপ ধরতে যাওয়ায় তারা কখনোই ভয় পায়নি। এর প্রায়শ্চিত্ত ন্যাড়াকে করতে হয়েছে বন্ধুতুল্য মৃত্যুঞ্জয়কে হারানোর মধ্য দিয়ে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৫: সাপ ধরার বায়না এলেই বিলাসী নানা ভাবে মৃত্যুঞ্জয়কে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করত কেন?

উত্তর: স্বামীকে গভীরভাবে ভালোবাসত বলে তাকে বিপদমুক্ত রাখার জন্য সাপ ধরার বায়না এলে বিলাসী তাতে আপত্তি করত। বিলাসী সাপুড়ের মেয়ে। সাপ ধরতে গিয়ে যেকোনো মুহূর্তে মৃত্যুঞ্জয় বিপদে পড়তে পারে এবং এর পরিণাম যে মৃত্যু পর্যন্তও গড়াতে পারে তা বিলাসী ভালোভাবেই জানত। ফলে সাপ ধরার বায়না এলে বিলাসী মৃত্যুঞ্জয়কে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করত। মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই বিলাসী মৃত্যুঞ্জয়কে সাপ ধরতে বারণ করত।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৬: বিলাসী যে জাত সাপুড়ের মেয়ে তা কেমন করে প্রমাণিত হলো?

উত্তর: গোয়ালার বাড়িতে কয়েক টুকরো কাগজ দেখে বিলাসী যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল তা ফলে গিয়েই প্রমাণিত হয় যে, বিলাসী জাত সাপুড়ের মেয়ে। গোয়ালার বাড়িতে মৃত্যুঞ্জয় সাপ ধরতে যায়, সাথে ছিল বিলাসী ঘরের মেঝে খুঁড়ে যে গর্ত পাওয়া গেল তা থেকে পাওয়া কাগজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিলাসী রায় দেয় সাপ একজোড়া তো আছেই বেশিও থাকতে পারে। পরে বিলাসীর কথা সত্যে পরিণত হয়। একটি কাগজ দেখে নির্ভুল ধারণা দিতে পারার কারণেই প্রমাণিত হলো যে, বিলাসী জাত সাপুড়ের মেয়ে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৭: মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা-মার দেওয়া নাম মিথ্যা প্রতিপন্ন হয় কীভাবে?

উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের অকাল মৃত্যুর মাধ্যমেই তার বাবা-মায়ের দেয়া নাম মিথ্যা প্রতিপন্ন হলো। ‘মৃত্যুঞ্জয়’ নামের অর্থ- যিনি মৃত্যুকে জয় করেন। মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা মা পুত্রের নাম মৃত্যুঞ্জয় রাখলেও সে মৃত্যুকে জয় করতে পারেনি। বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যুর সাথে লড়ে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুঞ্জয় অচিরেই ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। আর এর সাথেই তার বাপ মায়ের দেওয়া মৃত্যুঞ্জয় নামের সার্থকতা মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৮: বিলাসী বিষপানে আত্মহত্যা করে কেন?

উত্তর: স্বামীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে বিলাসী বিষপানে আত্মহত্যা করে। বিলাসী ও মৃত্যুঞ্জয়ের মাঝে ছিল গভীর প্রেম। সাপুড়ের মেয়ে বিলাসীকে আপন করে পাওয়ার জন্যই মৃত্যুঞ্জয় জাত বিসর্জন দিয়ে পুরোদস্তুর সাপুড়ে জীবন বেছে নিয়েছিল। নিয়তির নির্মম পরিহাসে তার মৃত্যু হয় সাপের কামড়েই। ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে বেঁচে থাকাটা মূল্যহীন বলে মনে হয় বিলাসীর কাছে। এ কারণেই সে বিষপানে আত্মহত্যা করে মৃত্যুঞ্জয়ের অনুগামী হয়।

অনুধাবন প্রশ্ন-৩৯: ‘আমার মাথার দিব্যি রইল, এসব তুমি আর কখনও করো না’— এ উক্তিটি কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ন্যাড়া যাতে সাপ ধরার মতো ভয়ংকর পেশায় নিয়োজিত না থাকে সেজন্যই স্বামীর মৃত্যুর পর বিলাসী তাকে এ পেশা ছাড়ার জন্য দিব্যি দেয়। বিলাসী জাত সাপুড়ের মেয়ে। সে জানত সাপ খুব ভয়ংকর প্রাণী, যেকোনো মুহূর্তে সাপুড়েকেও কামড়াতে পারে। সাপ সম্বন্ধে তার এ ধারণা সত্যিও হয়েছিল। একদিন সাপের কামড়েই তার প্রিয়জন মৃত্যুঞ্জয়কে হারাতে হয়েছে। সে জানে, এ পেশা না ছাড়লে হয়তো ন্যাড়ারও শেষ পরিণতি হবে মৃত্যু। তাই বিলাসী তাকে এ পেশা ছাড়ার জন্য দিব্যি দেয়।

অনুধাবন প্রশ্ন-৪০: ‘সাপের বিষ যে বাঙালির বিষ নয়, তাহা আমিও বুঝিয়াছিলাম’- উক্তিটি বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: উক্তিটির মাধ্যমে ন্যাড়া সাপের বিষের অব্যর্থ প্রভাব সম্পর্কে তার ধারণা নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যক্ত করেছে। ‘বিলাসী’ গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়ে পেশা গ্রহণ করার পর একদিন সাপ ধরতে গিয়ে সাপের দংশনেই মৃত্যুর মুখে পড়ে। গল্পের কথক ন্যাড়া বুঝেছিল সাপের বিষ একেবারেই অব্যর্থ। তা মন্ত্র, তন্ত্র, মাদুলি, বিষহরীর আজ্ঞা কিছুই মানে না। অন্যদিকে ‘বাঙালির বিষ’ অর্থাৎ বাঙালির ক্ষোভ ও রোষ স্বল্পস্থায়ী ও অকার্যকর। ন্যাড়া কিছুটা ব্যঙ্গাত্মকভাবে সাপের বিষের সঙ্গে বাঙালির মুখের বিষের তুলনা করেছে।

অনুধাবন প্রশ্ন-৪১: বিলাসীর আত্মহত্যার বিষয়টি অনেকের কাছে পরিহাসের বিষয় হলো কেন?

উত্তর: নিষ্ঠুর সমাজে নিচু শ্রেণির মানুষের জীবন যেমন পরিহাসের, মৃত্যুও সেই সমাজে করুণার উদ্রেক না ঘটিয়ে পরিহাসের উদ্রেক ঘটায়। মৃত্যুশয্যাশায়ী মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীর রাঁধা ভাত খায় বলে সমাজে অন্নপাপ করেছে বলে তাদের সমাজচ্যুত করা হয়। সমাজচ্যুত মৃত্যুঞ্জয় সাপ ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যায়। ভালোবাসার মানুষের অকাল প্রয়াণে বিলাসীও আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কিন্তু নিচুকুলের মানুষের এই ভালোবাসার মূল্য সেই নিষ্ঠুর সমাজে ছিল না এবং তাদের কৃত পাপের ফলে তাদের এই পরিণতি অনিবার্য ছিল বলেই তারা মনে করে। একে তো নিচু জাতের, তার ওপর স্বামীর জন্য আত্মহত্যা ফলে বিলাসীর এই আত্মত্যাগ সমাজে পরিহাসের বিষয় হয়েই রইল।

অনুধাবন প্রশ্ন-৪২: বিয়ের ব্যাপারটি Contract হিসেবে প্রতীয়মান হয় কখন?

উত্তর: যেখানে নর-নারীর হৃদয় জয় করার ব্যাপার নেই, পরিবার থেকে বিয়ে চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং ভালোবাসা ছাড়াই সারা জীবন অতিবাহিত হয়, সেখানেই বিয়েটাকে Contract বলে মনে হয় । রক্ষণশীল পল্লী হিন্দু সমাজব্যবস্থায় নর-নারীর মন দেওয়া-নেওয়া ছিল গুরুতর অপরাধ। সেখানে পরিবার ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেয় এবং যেহেতু ভালোবাসা কী তারা তা বোঝেই না, বিয়ের পরও তাই তাদের মাঝে ভালোবাসার স্ফুরণ ঘটে না। সংসার একটা দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে, ভালোবাসার পর্যায়ে পড়ে না। তাই এ রকম সমাজব্যবস্থায় বিয়ে Contract ব্যতীত আর কিছুই নয়।

অনুধাবন প্রশ্ন-৪৩: ‘অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: হিন্দু সমাজের নানান আচারবিধি যে নানা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে টিকে আছে মাত্র, তা বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে হিন্দু সমাজের আচার-নীতিগুলো মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করত। এসব রীতিনীতির কিছু সমাজের বিকাশের জন্য বাধা তৈরি করে। নানা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এসব রীতি আজ গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়ার মতো রক্ষণশীলদের মতে, এতকিছুর পরেও হিন্দু সমাজের রীতিগুলোর কিছু তো টিকে আছে। কিন্তু গল্পকথকের মতে, এমন টিকে থাকা সমর্থনযোগ্য নয়। অতিকায় হস্তী পৃথিবী থেকে বহু আগে বিদায় নিলেও তেলাপোকা আজও টিকে আছে। এমনভাবে টিকে থাকার মাঝে গৌরবের কিছু নেই।

এখানে এইচএসসি বাংলা ১ম পত্রের বিলাসী গল্পের মোট ৪৩টি অনুধাবন প্রশ্ন বা অনুধাবনমূলক প্রশ্ন দেওয়া হলো। এখান থেকে চাইলে এর পিডিএফও ডাউনলোড করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button